কম্পিউটার কি | কম্পিউটার কাকে বলে | কম্পিউটারের জনক কে
কম্পিউটার আধুনিক বিজ্ঞানের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার। এটি বর্তমানে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। শিক্ষা, ব্যবসা, গবেষণা, বিনোদনসহ জীবনের প্রায় সকল ক্ষেত্রে কম্পিউটারের ব্যবহার লক্ষণীয়। এটি আমাদের কাজকে সহজ, দ্রুত ও নির্ভুলভাবে সম্পন্ন করতে সাহায্য করে।
কম্পিউটার একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস যা ডেটা গ্রহণ, প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণ করে এবং ফলাফল প্রদর্শন করে। প্রথমদিকে, কম্পিউটার বিশাল আকৃতির ছিল এবং সীমিত কার্যক্ষমতা সম্পন্ন ছিল। ১৯৪০-এর দশকে আধুনিক ডিজিটাল কম্পিউটারের আবির্ভাব ঘটে, যা সময়ের সাথে আরও উন্নত ও শক্তিশালী হয়েছে।
কম্পিউটারের প্রধান অংশ
১. সিপিইউ (CPU): এটি কম্পিউটারের মস্তিষ্ক, যা সকল গাণিতিক ও যুক্তিসংক্রান্ত কাজ সম্পন্ন করে।
২. রম ও র্যাম (ROM & RAM): স্থায়ী ও অস্থায়ী মেমোরি হিসেবে কাজ করে।
৩. ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইস: কীবোর্ড, মাউস, মনিটর, প্রিন্টার ইত্যাদি।
কম্পিউটারের ব্যবহার
কম্পিউটার বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে, যেমন—
- শিক্ষা: অনলাইন শিক্ষা, ই-লার্নিং ও গবেষণায়।
- ব্যবসা: হিসাব-নিকাশ, ডেটা সংরক্ষণ ও ই-কমার্সে।
- চিকিৎসা: রোগ নির্ণয়, অপারেশন এবং মেডিকেল গবেষণায়।
- বিনোদন: গেমিং, সিনেমা দেখা ও গান শোনার জন্য।
- যোগাযোগ: ই-মেইল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ভিডিও কল।
কম্পিউটারের সুবিধা ও অসুবিধা
সুবিধা:
- দ্রুত ও নির্ভুলভাবে কাজ সম্পন্ন করা যায়।
- প্রচুর তথ্য সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণ করা যায়।
- বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে সহজে যোগাযোগ করা যায়।
অসুবিধা:
- দীর্ঘক্ষণ ব্যবহারে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারে।
- সাইবার ক্রাইম ও তথ্য চুরির ঝুঁকি থাকে।
- অতিরিক্ত ব্যবহার মানসিক ও শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
কম্পিউটার আধুনিক বিশ্বকে বদলে দিয়েছে এবং প্রতিদিন এটি আরও উন্নত হচ্ছে। এর সঠিক ব্যবহার আমাদের জীবনকে আরও সহজ ও উন্নত করতে পারে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলোও মাথায় রাখা প্রয়োজন। প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে কম্পিউটারের জ্ঞান অর্জন করা বর্তমান যুগের জন্য অপরিহার্য।
কম্পিউটার শব্দের অর্থ কি
কম্পিউটার শব্দটি ইংরেজি Computer থেকে এসেছে, যার মূল অর্থ গণনাকারী বা হিসাবকারী যন্ত্র। এটি একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস, যা ডাটা গ্রহণ করে, প্রোগ্রামের নির্দেশ অনুযায়ী তা প্রক্রিয়া করে এবং ফলাফল প্রদর্শন করে। মূলত, কম্পিউটার দ্রুত গণনা ও তথ্য প্রক্রিয়াকরণের জন্য ব্যবহৃত হয়।
কম্পিউটারের কাজ কি
কম্পিউটার একটি অত্যন্ত শক্তিশালী এবং ব্যবহারিক যন্ত্র, যা নানা ধরনের কাজ সম্পাদন করতে সক্ষম। এটি মূলত তথ্য প্রক্রিয়া, সঞ্চয় এবং ব্যবস্থাপনা করার জন্য ব্যবহৃত হয়। কম্পিউটার বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে মানুষের দৈনন্দিন জীবনে সহায়ক হিসেবে কাজ করে থাকে। এর কিছু মৌলিক কাজের মধ্যে রয়েছে
১. তথ্য প্রক্রিয়া: কম্পিউটার মূলত তথ্য প্রক্রিয়া করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি ডাটা গ্রহণ, বিশ্লেষণ, সংরক্ষণ এবং প্রদর্শনের কাজ করে থাকে। বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করে মানুষ বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করে।
২. ইন্টারনেট ব্রাউজিং: ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য অনুসন্ধান, যোগাযোগ এবং কাজ করা অনেক সহজ হয়েছে। কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেইল ইত্যাদি মাধ্যমে বিশ্বের সাথে সংযুক্ত হতে পারেন।
৩. অটোমেশন: কম্পিউটার বিভিন্ন প্রক্রিয়া অটোমেট করতে সাহায্য করে। যেমন, প্রিন্টার দ্বারা ডকুমেন্ট প্রিন্ট করা বা ফ্যাক্স করা, ইমেইল পাঠানো, সফটওয়্যারের মাধ্যমে হিসাবনিকাশ করা ইত্যাদি।
৪. গেমিং এবং বিনোদন: কম্পিউটার গেমস, মুভি, ভিডিও এডিটিং, সঙ্গীত এবং অন্যান্য বিনোদনমূলক কার্যক্রমের জন্যও ব্যবহার করা হয়।
৫. শিক্ষা: শিক্ষার্থীরা কম্পিউটার ব্যবহার করে অনলাইনে পড়াশোনা করতে পারে, বিভিন্ন কোর্স করতে পারে, অথবা গবেষণা ও বিভিন্ন একাডেমিক কার্যক্রমে সাহায্য পেতে পারে।
কম্পিউটার বর্তমানে প্রায় প্রতিটি শিল্প, অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাসাবাড়ি এবং বিনোদন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এর কাজের বিস্তৃতি অনেক বড়, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রকে সহজ, দ্রুত এবং আরও কার্যকর করে তুলছে।
কম্পিউটারের জনক কে
কম্পিউটারের জনক বলা হয় চার্লস ব্যাবেজ (Charles Babbage) কে। তিনি ১৮৩৭ সালে "ডিফারেনশিয়াল ইঞ্জিন" এবং "অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন" নামক যন্ত্র দুটি উদ্ভাবন করেন, যা আধুনিক কম্পিউটারের প্রাথমিক ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত। যদিও তার তৈরি যন্ত্রগুলি তখনকার প্রযুক্তিতে সম্পূর্ণ কার্যকর হয়নি, তবে তাকে কম্পিউটারের জনক হিসেবে সম্মানিত করা হয় তার দৃষ্টিভঙ্গি এবং উদ্ভাবনী চিন্তাধারার জন্য।
আধুনিক কম্পিউটারের জনক কে
আধুনিক কম্পিউটারের জনক হিসেবে অ্যালান টুরিং (Alan Turing) কে আখ্যায়িত করা হয়। তিনি ১৯৩৬ সালে "টুরিং মেশিন" ধারণা প্রবর্তন করেন, যা গণনা তত্ত্বের একটি মৌলিক অংশ। তার গবেষণা এবং তত্ত্বের ভিত্তিতে আধুনিক কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং অ্যালগরিদমের ভিত্তি স্থাপন হয়। টুরিংকে গণনা তত্ত্বের পিতা এবং কম্পিউটার বিজ্ঞান এর অন্যতম অগ্রদূত হিসেবে সম্মানিত করা হয়।
কম্পিউটার প্রজন্ম কি
কম্পিউটার ভাইরাস কি
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কি
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার এর বেতন
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন তাদের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, এবং কর্মস্থলের উপর নির্ভর করে। বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বাজারে গড় বেতনের একটি ধারণা নিচে দেওয়া হলো:
বাংলাদেশে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন
- ফ্রেশার (০-২ বছর অভিজ্ঞতা): ২০,০০০ - ৪০,০০০ টাকা/মাস
- মিড-লেভেল (৩-৫ বছর অভিজ্ঞতা): ৫০,০০০ - ৮০,০০০ টাকা/মাস
- সিনিয়র (৬+ বছর অভিজ্ঞতা): ১,০০,০০০+ টাকা/মাস
- ফ্রিল্যান্সার বা রিমোট জব: স্কিলের উপর নির্ভর করে মাসে ৫০,০০০ - ৩,০০,০০০+ টাকা আয় সম্ভব
আন্তর্জাতিক বাজারে (যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া)
- ফ্রেশার: $৫০,০০০ - $৭০,০০০/বছর
- মিড-লেভেল: $৮০,০০০ - $১২০,০০০/বছর
- সিনিয়র: $১২০,০০০+ /বছর
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চাইলে আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। সাধারণত বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য যোগ্যতাগুলো হলো
- শিক্ষাগত যোগ্যতা: এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ হতে হবে, যেখানে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়ন থাকা বাধ্যতামূলক।
- নির্দিষ্ট জিপিএ: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য সাধারণত উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো জিপিএ (৪.০০+) থাকতে হয়।
- বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা: সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার জন্য আলাদা ভর্তি পরীক্ষা দিতে হয় (যেমন BUET, DU, CUET, KUET, RUET ইত্যাদিতে ভর্তি পরীক্ষা)।
- ইংরেজি ও গণিত দক্ষতা: ভালো গণিত ও ইংরেজি দক্ষতা প্রয়োজন, কারণ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং-এ প্রোগ্রামিং, অ্যালগরিদম এবং লজিক্যাল থিঙ্কিং গুরুত্বপূর্ণ।
- প্রযুক্তি ও কম্পিউটারের প্রতি আগ্রহ: সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার, নেটওয়ার্কিং, এবং নতুন প্রযুক্তি শেখার প্রতি আগ্রহ থাকা দরকার